দিনকাল রিপোর্ট
বাংলা ভাষার মর্যাদা অক্ষুণœ রেখে সারা বিশ্বে আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকারে পালিত হয়েছে মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একই সঙ্গে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে একুশের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন সর্বস্তরের মানুষ। রবিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সারা দেশে মিনারে মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধায় জাতি স্মরণ করেছে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের। এদিন ধর্ম-বর্ণ ভুলে শহীদ মিনারে মানুষের ঢল নেমেছে। তাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার ফুলে ছেয়ে গেছে স্মৃতির মিনার।
হাতে হাতে গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ দেশি-বিদেশি ফুল নিয়ে ভোরেই পথে নামে মানুষ। শুধু ঢাকায় নয়, দেশের সব জায়গায় এদিন সব পথ মিশে গিয়েছিল স্মৃতির মিনারে। শিশু থেকে বৃদ্ধ- কেউ ব্যক্তিগতভাবে, কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, কেউ বা সংগঠনের সহকর্মীদের নিয়ে প্রভাতফেরিতে অংশ নেন। নগ্ন পায়ে সারি সারি মানুষ হেঁটেছেন পথে পথে, গেয়েছেন ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি।’ মিনারে মিনারে শ্রদ্ধা জানানো ছাড়াও দিনটি পালনে ছিল নানা আয়োজন। ছিল ফাতেহা পাঠ, কোরআনখানি, বিশেষ প্রার্থনা, আলোচনা সভা, সেমিনার, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি। এছাড়া এদিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা বাংলা করার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। শনিবার রাত ১১টার পর থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আশপাশে মানুষ জড়ো হতে থাকেন। কারও পরনে কালো পোশাক, কারও বুকে কালো ব্যাজ। কী শাড়ি আর পাঞ্জাবি- কোনোটিতে বর্ণমালাখচিত আবার কোনোটিতে ভাষাশহীদদের নাম-ছবি। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শহীদ মিনারে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এর অংশ হিসাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রবেশে প্রতিটি সংগঠনের সর্বোচ্চ ৫ জন এবং ব্যক্তিপর্যায়ে একসঙ্গে ২ জনকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু পরামর্শটি যথাযথভাবে পালিত হয়নি। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার কিছুটা ভিন্ন প্রেক্ষাপটে দিবসটি পালিত হয়। রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম সালাউদ্দিন ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান তাদের স্বাগত জানান। একই সঙ্গে তিনি স্বাগত জানান মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও অন্য দেশি-বিদেশি অতিথিদের।
মানুষের ঢল, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি : প্রথম প্রহর থেকেই শহীদ মিনারে ছিল নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিড়। তবে রাত গভীর হলে তা কিছুটা কমে। এরপর সকালে প্রভাতফেরিতে মানুষের ঢল নামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ হলের অদূরে পলাশীর মোড়ে জড়ো হন। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন অনেকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তল্লাশি শেষে তারা সারিবদ্ধভাবে ভেতরে প্রবেশ করেন। তবে অনেকেই একসঙ্গে পাঁচজনের শ্রদ্ধা নিবেদনের সরকারি নির্দেশনা মানেননি। মাস্কও সঠিকভাবে পরা ছিল না অনেকের। কারা শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন তা জানাতে পলাশীর মোড়ের অদূরে ইলেকট্রনিক ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হয়।
অচিরেই সুপ্রিম কোর্টের সব রায় বাংলায় : রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, গত ডিসেম্বরে আমরা একটি সফটওয়্যারের ব্যবহার শুরু করেছি। যার ফলে সুপ্রিম কোর্টের সব রায় ইংরেজি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলায় রূপান্তরিত হচ্ছে। রূপান্তর কাজ শেষ হলে আমরা আরও গুছিয়ে নেব। তিনি বলেন, অচিরেই সুপ্রিম কোর্টের রায় বাংলায় দেওয়া হবে। যার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি অনুবাদ সেল গঠন করেছি। তারা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।
রবিবার প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে দুই সামরিক সচিব শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শুরু হয় অন্যদের পালা। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষ থেকে শহীদবেদিতে ফুল দেন জাতীয় সংসদের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস কমোডর এমএম নাঈম রহমান। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতির পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ও কর্নেল (অব.) ফারুক খান এবং তথ্যমন্ত্রী ও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন। আলাদাভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
বিএনপির শ্রদ্ধাজ্ঞাপন : সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, ড. মামুন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আমিনুল হক, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শামীমুর রহমান শামীম, নাজিম উদ্দিন আলম, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, যুবদল সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, জাসাসের সহ-সভাপতি শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, এ্যাড. আমিনুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রোকন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিঃ মঞ্জু মিয়া, সহ-দফতর সম্পাদক মিজানুর রহমান, গুলশান থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. দ্বীন ইসলাম, কলাবাগান থানা বিএনপির সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. সায়েদুর রহমান সাইদ, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ কিবরিয়া লাকী, দফতর সম্পাদক মইন উদ্দিন মইনু, ১৬নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. নাসির গাজী, কামাল হোসেন, পল্লবী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ মল্লিক প্রমুখ। এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের পেছনেই রয়েছে অধিকার হারানোর বেদনা। আর অধিকার হারানোর ওই বেদনা থেকেই অধিকার প্রতিষ্ঠার রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম। রিজভী বলেন, ‘বায়ান্নর যে রক্তস্নাত চেতনা, সেদিনের যে আত্মত্যাগ সেটা আসলে ছিল অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। সেটা আজও আমাদের উদ্বুদ্ধ করে, আমাদের সাহসী করে তোলে। আজও আমাদের যে অধিকার হারানো, গণতন্ত্র হারানো, কথা বলার স্বাধীনতা হারানো সেটা প্রতিষ্ঠার জন্য জোটবদ্ধভাবে সংগ্রাম করছি, কথা বলছি, আমরা মামলা, হামলা, গ্রেফতার, গুম ও খুনকে বরণ করে নিয়েও আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী আপনারা দেখেছেন স্বাধীনতার মূল যে স্পিরিট সেই গণতন্ত্র কে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে একদলীয় শাসনের মাধ্যমে। সব দল বন্ধ করে, সব গণমাধ্যম বন্ধ করে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণতন্ত্রের মুক্ত ধারা বইয়ে দিয়েছে। বাকশাল থেকে বহু দলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মানুষের কণ্ঠের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তারই সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়া ৯ বছর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করা হয়েছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করেছে, কারণ তাকে বন্দি না করলে দিনের ভোট রাতে করা যেতো না। একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন, মাফিয়াতন্ত্র, ক্যাসিনোতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যেতো না। সেগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলেই আজ তিন বছর বেগম খালেদা জিয়া বন্দি। তিনি বলেন, ‘বায়ান্নর চেতনা আমাদের চেতনাকে শানিত করেছে, ধারালো করেছে বলেই আজও আমরা দৈত্যের ন্যায় একটা কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিএনপিসহ বিরোধী দল বিরোধীমত এক কাতারে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করছি। এই চেতনার উৎসভূমি হচ্ছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন।
আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা নিবেদন : অমর একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। রবিবার প্রথম প্রহরের পর সকালে কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রভাতফেরি সহকারে আজিমপুর কবরস্থানে ভাষাশহীদদের কবরে ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলটির নেতাকর্মীরা। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের নেতৃত্বে দলটির নেতারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর পর্যায়ক্রমে শ্রদ্ধা জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, পুলিশ প্রধান (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। শ্রদ্ধা জানান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবার্ষিকী জাতীয় উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান। এরপর একে একে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও বিদেশি সংস্থার প্রতিনিধি, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।
এছাড়া শ্রদ্ধা জানান ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষে ফজলে হোসেন বাদশা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (ইনু), জাতীয় পার্টি (জেপি), গণফোরাম, বিকল্পধারা, জেএসডি, ন্যাপ, বাংলা একাডেমির সচিব এএইচএম লোকমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান, আনসার বাহিনী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ন্যাপ, বাম ঐক্যফ্রন্ট, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী নেতারা। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মো. সোহরাব হোসেন, গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আকতার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কিশোরগঞ্জ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি মিজান মালিকের নেতৃত্বে, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি মামুন ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয়ের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, বাংলাদেশ হকার্স লীগ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাত সাড়ে ১২টার পর শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের জনগণের জন্য শহীদ মিনার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
বরিশাল মহানগর বিএনপির শ্রদ্ধা : ২১ ফেব্রুয়ারিতে বরিশাল মহানগর বিএনপির পক্ষে প্রভাতফেরিতে নেতৃত্ব দেন সাবেক ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আফরোজা খানম নাসরিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা শরীফ ফিরোজ আহমেদ, সাকিব মল্লিক রাতুল, আমিনুল ইসলাম সুজন, মোস্তাক সরদার শাওন, নুরুল ইসলাম পনির, চৌধুরী সাঈদ খোকন, আশিক হাওলাদার, শামীম, মেহেদী হাসান, নুরুল্লাহ শরীফ সাব্বির, সাজ্জাদ হোসেন সাকিব প্রমুখ।
ভাষা শহীদদের জন্য মসজিদে মসজিদে দোয়া : মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে ভাষা শহীদদের জন্য বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বেলা ১১টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সংক্ষিপ্ত আলোচনা, কোরআন খতম, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫০টি ইসলামিক মিশন, ৭টি ইমাম প্রশিক্ষণ একডেমি ও সব অফিসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় কোরআন খতম, দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
ঢাবি ভিসির শ্রদ্ধার্ঘ্য : শুদ্ধ ভাষার বিকাশে পাঁচমিশালি চটকদার ভাষা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। রবিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নয়ন বিশ্ব সংস্কৃতির ভান্ডারে প্রবেশ করছে তরুণ প্রন্ম । যার কারণে নানা ভাষার মিশেল হচ্ছে। এগুলো ভাষার বিকাশে বাধা। তিনি বলেন, পরিশীলিত, পরিমার্জিত ও পরিশুদ্ধ ভাষার প্রচলন জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
জাপানি রাষ্ট্রদূতের শুভেচ্ছা বার্তা : শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নোয়াকি। বার্তায় তিনি বলেন, আমি আনন্দিত যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি পালন করছি সেই দেশ থেকে, যেখানে এর জন্ম । যেহেতু ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকে ত্বরান্বিত করেছে, সেদিক থেকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ৬০ বছর আগে এদেশের যেসব সাহসী পুরুষ ও নারী তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাদেরকে জাপানের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক শ্রদ্ধা।
জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা বাংলা করার দাবি : জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা বাংলা করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বিএসএএফ) নামে সামাজিক সংগঠন। রবিবার ২১ ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক পথসভা ও র্যালি থেকে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।